আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Krishipedia.com

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন পদ্ধতি A টু Z

প্রকাশক:   সর্বশেষ আপডেট : ২৬, মার্চ, ২০২৪   বিভাগ: হাঁস পালন  

যারা ডিম উৎপাদনের উদ্দেশ্যে হাঁস পালন করতে আগ্রহী তাদের কাছে ক্যাম্পবেল জাতই বেশি জনপ্রিয়। ইংল্যান্ডের এই সংকর জাতটির হাঁসের রং খাকি বলে এর নাম খাকি ক্যাম্পবেল। ক্যাম্পবেল নামক এক মহিলা ১৯০১ সালে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন জাতের হাঁসের মধ্যে সংকরায়ন ঘটিয়ে এ জাত সৃষ্টি করেন।

চিত্রঃ খাকি ক্যাম্পবেল জাতের হাঁস ও হাসা।

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের প্রধান বৈশিষ্ট্যঃ

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস সাড়ে ৪ মাস বয়স থেকেই ডিম দিতে শুরু করে এবং বছরে প্রায় ৩০০টি পর্যন্ত ডিম দেয়। ডিমের আকারও অপেক্ষাকৃত বড়। এভাবে এ জাত টানা ১-৩ বছর পর্যন্ত এই হারে ডিম পাড়ে। পরে ডিম পাড়ার হার কমে এলেও তা দেশি হাঁসের তুলনায় বেশি। এ হাঁসের মাংসও মুরগির মতোই পুষ্টিকর। হাসা এবং ডিম পাড়ার পর স্ত্রী হাঁসকে মাংস হিসেবে ব্যবহার করা যায়। খাকি ক্যাম্পবেল জাতের হাঁস বেশ কষ্টসহিষ্ণু। এই হাস পালনে বেশি পানিরও প্রয়োজন হয় না। কেবল খাবার ও গলা ডোবানোর জন্য প্রয়োজনীয় পানি পেলেই এরা সহজ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে পারে। তাই পুকুর বা অন্যান্য জলাশয় ছাড়াই এই হাস পালন সম্ভব। ডিম উৎপাদনের জন্য খাকি ক্যাম্পবেল জাতের ক্ষেত্রে পুরুষ হাঁসের উপস্থিতি প্রয়োজন হয় না, অথচ দেশি হাঁসের ক্ষেত্রে পুরুষ হাসের প্রয়োজন হয়।

খাকি ক্যাম্পবেল ও হাইব্রিড মুরগির তুলনাঃ

হাইব্রিড মুরগি খাকি কাম্পবেল মুরগি
১. বছরে প্রায় ২৫০টি ডিম দেয়।  ১. বছরে প্রায় ৩০০টি ডিম দেয়।
২. মাত্র ১ বছর ভালো ডিম পাওয়া যায়। ২. একাদিক্ৰমে ২-৩ বছর একই হারে ডিম দেয়।
৩. ডিমের গড় ওজন ৬০ গ্রাম। ৩. ডিমের গড় ওজন ৭০ গ্রাম।
৪. সারাদিন ধরেই ডিম দেয়। ৪. সকাল ৯টার মধ্যে ডিম পাড়া শেষ করে বলে ব্যবস্থাপনা সহজ।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও গরম সহ্য করার ক্ষমতা অনেক কম। ৫. রোগ প্রতিরোধ ও গরম সহ্য করার ক্ষমতা বেশি।
৬. অত্যধিক গরমে মুরগির ঘর ঠাণ্ডা রাখার প্রয়োজন।  ৬. হাঁসের ক্ষেত্রে তার প্রয়োজন হয় না।
৭. ঘর, খাদ্য ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেশি। ৭. ঘর, খাদ্য ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা ব্যয় কম।

ঘরে খাকি ক্যাম্পবেল পালনঃ

পুকুর ডোবা বা জলাশয় না থাকলেও সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস। পালন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে হাঁসের ঘরের মধ্যে প্লাস্টিকের বা পোড়া মাটির বা সিমেন্টের তৈরি পাত্রে পানি সরবরাহ করতে হবে। পাত্রটি ঘরের মেঝেতে এমনভাবে রাখা উচিত যাতে পাত্রের কানা ঘরের মেঝে থেকে কিছুটা উঁচু হয়। এতে ঘরের মেঝে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর না হয়ে শুকনো থাকবে। এ পদ্ধতি ছাড়া পাকা নালা তৈরি করেও পানি সরবরাহ করা যায়। এই নালা ঘরের দৈর্ঘ্যের সমপরিমাণ লম্বা, ৪৫ সেন্টিমিটার (১.৫ ফুট) চওড়া ও ২২ সেন্টিমিটার (৯ ইঞ্চি) গভীর হবে। নালার পানি দিনে অন্তত একবার পাল্টে দেয়ার সুবিধার জন্য একদিকে ঢালু রাখা উচিত।

চিত্রঃ ঘরে আবদ্ধ হাঁস

এটা মনে রাখতে হবে যে, হাসের সর্বদা পানির প্রয়োজন। তবে খুব বেশি পরিমাণ পানির দরকার হয় না। কেবল গলা ডোবাতে পারে এমন পরিমাণ পানি হলেই চলে। কারণ খাবার মুখে নিয়েই হাঁস পানিতে মুখ দেয়। তাছাড়া হাঁসের চোখ ও ঠোঁট পরিষ্কার রাখার জন্যও পানির প্রয়োজন হয়। দেখা গেছে যে পানিতে সাঁতার কাটার সুযোগ না দিয়ে হাঁস পালনে হাঁসের প্রজনন ও উৎপাদন ক্ষমতা হেরফের তো হয়ই না; বরং খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের ক্ষেত্রে সাঁতারজনিত কারণে বা শক্তি খরচ রহিত করা যায় যা ডিম উৎপাদনে সহায়ক।

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের ঘর ব্যবস্থাপনাঃ

পুকুর, ডোবা বা জলাশয়ে হাঁস পালন করলে শুধু রাতের জন্য হাঁসের ঘরের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে হাঁস প্রতি ৭৫ বর্গ সেন্টিমিটার (প্রায় ২.৫ বর্গফুট) জায়গা হলেই চলবে। সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় মেঝেতে হাঁস-পালন করলে প্রতি হাঁসের জন্য ১২০ বৰ্গ সেন্টিমিটার (প্রায় ৪ বৰ্গফুট) জায়গার প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া হাঁসের চরবার জন্য ঘরে সঙ্গে কিছু ঘেরা জায়গা রাখলে ভালো হয়। হাঁসের ঘরের উচ্চতা ১৫০ সেন্টিমিটার (৫ ফুট) করলেই চলবে। ঘরের চাল টিন, টালি বা খড় দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে । চাল। বা ছাচ অন্তত ১ হাত পরিমাণ বের করা থাকবে যাতে বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকতে না। পারে। ঘরের দেয়াল তারের জাল বা মলিবশের জাফরি দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে। ঘরের মেঝে একদিকে ঢাল রেখে তৈরি হবে যাতে ঘরে পানি দাড়িয়ে স্যাতসেঁতে না। হয়ে যায়। মেঝে স্যাতসেঁতে হলে ঠান্ডা লেগে হাঁসের অসুখ হতে পারে। ঘরের মেরে পাকা হওয়া ভালো, তবে মাটিরও করা যায়। মেঝে যাতে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন। থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। হাঁস প্রতিপালনের জন্য শেড হাঁসের ঘর তৈরির উপকরণ বেশি দামি না হলেও চলবে। তবে লক্ষ রাখতে হবে। যাতে ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে। তাই হাঁসের ঘর পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা হলে ভালো হয়। রাতে ঘরের দরজা যাতে বন্ধ করা যায় তার ব্যবস্থা রাখা। দরকার। হাঁসের ঘরে যাতে কোনোভাবেই বেজি, শিয়াল, বাঘড়াসা প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের খাদ্যঃ

পুকুর, ডোবা বা জলাশয়ে পালন করলে হাঁস নিজেদের খাবারের অনেকটাই নিজেরাই সংগ্রহ করে নেয়। এরা বাগান ও জলাশয় থেকে ঘাস পাতা, পোকা-মাকড়, কেঁচো, শামুক, গুগলি এবং উদ্ভিদ ও প্রাণিকণা খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। শামুক-গুগলি হাঁসের খুব প্রিয় খাদ্য এবং আমিষ জাতীয় খাদ্যের চাহিদা অনেকটাই মেটায়। এগুলো অতি অল্প খরচে সংগ্রহ করে সামান্য থেঁতলে পুষ্টিকর খাদ্য হিসাবে ঘরে প্রতিপালিত হাঁসকে অনায়াসেই সরবরাহ করা যায়।
আবদ্ধ অবস্থায় ক্যাম্পবেল হাঁস পালন করতে হলে সুষম খাদ্যের ওপর গুরুত্ব ত হবে এবং এ খাদ্য পালনকারীকেই তৈরি করতে হবে। প্রতি ১০০ কেজি সুষম।
তৈরি করার জন্য সাধারণত বড় বা ছোট জাতের দানা শস্য (গম/ভুট্টা ভাঙা, জোয়ার বা সাইলো গুড়ো) ৩৫ কেজি, দানা-শস্যের উপজাত দ্রব্য (ধানের কুঁড়ো, গমের ভুসি, চালের খুদ) ৩০ কেজি, খৈল জাতীয় উপাদান (বাদাম, সয়াবিন, তিল বা। সরিষা খৈলের যে কোনো একটি) ১০ কেজি, মাছের গুঁড়ো ২০ কেজি এবং ঝিনুক কুচি ও খনিজ লবণের মিশ্রণ ৫ কেজি মেশাতে হবে। এভাবে মেশানো ১০০ কেজি খাবারে ৩০ গ্রাম ভিটামিন-এ, বি, ডি, মেশাতে হবে। হাঁসকে পরিমাণ মতো শামুক গুগলি খাওয়ানো সম্ভব হলে মাছের গুঁড়ো না খাওয়ালেও চলবে। হাঁসের বিভিন্ন অবস্থায় পুষ্টির চাহিদা বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন- হাঁসের ছোট বাচ্চার স্টার্টার ম্যাশ (০-৩ সপ্তাহ), বাড়ন্ত বাচ্চার জন্য গোয়ার ম্যাশ (৪-২০ সপ্তাহ) এবং ডিম পাড়া অবস্থায় লেয়ার ম্যাশ-এর প্রয়োজন।

বিভিন্ন অবস্থায় খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের খাদ্য কেমন হওয়া উচিত তা নিচে দেখানো হলো (একটি আদর্শ খামারে ব্যবহৃত) :

খাদ্যের উপাদানকেজি/১০০ কেজি

স্টাটার হাঁস

(০-৩ সপ্তাহ)

গ্রোয়ার হাঁস(৪-২০ সপ্তাহ) লেয়ার হাঁস(২০ সপ্তাহের বেশি)
ভূট্টা ভাঙ্গা ৬১.৫০ ৬১.০০ ৬৭.০০
সয়াবিন মিল ২৬.০০ ১৬.০০ ১৯.০০
মাছের গুঁড়া ৮.০০ ৮.০০ ৬.০০
লুসার্ন পাতা গুঁড়া ২.০০ ২.৫০ ২.৫০
শামুক-গুগলির খোলা ভাঙা ৩.০০
খনিজ পদার্থের মিশ্রন ২.৫০ ২.৫০ ২.৫০

প্রতি ১০০ কেজি খাদ্যে ৩৫ গ্রাম রোভিমিক্স বা ভিটাব্লেন্ড, ৫ গ্রাম নিয়াসিন এবং ৩৫ গ্রাম কোলিন ক্লোরাইড মেশাতে হবে।

হাঁসের খাদ্যের পরিমাণঃ

পুকুর বা জলাশয়ে হাঁস পালন করলে খুব কম খাবারের দরকার। এক্ষেত্রে হাঁস প্রতি দিনে ৫০-৬০ খাবার দিলেই চলে। তবে সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় পালন করলে হ্রস প্রতি বেশি খাদ্যের প্রয়োজন হয়। ৮ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত হাস প্ৰতি ৪/৫ কেজি এবং ২০ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ১২-১৩ কেজি সুষম খাদ্যের দরকার হয়। পূর্ণ বয়সে ডিম পাড়া অবস্থায় প্রতিটি হাঁসের জন্য বছরে গড়ে ৫০ কেজি সুষম খাদ্যের প্রয়োজন হয়। ২০ সপ্তাহের পরে ডিম পাড়ার হারের ওপর নির্ভর করে হাঁস প্রতি দৈনিক ১২৫-১৫০ গ্রাম খাদ্যের প্রয়োজন হয়।

হাঁসকে কিভাবে খাবার দিতে হয়ঃ

হাসকে নির্দিষ্ট পাত্রে খাবার দিতে হয়। পানি মিশিয়ে খাদ্য বা ম্যাশ নরম করে দিলে। হাঁস তা সহজে খেতে পারে । খাবার মুখে নিয়েই হাস পানিতে মুখ দেয়, তাই খাবার। পাত্রের কাছে সব সময় পানির পাত্র রাখতে হবে। মুক্ত জায়গায় হাঁস পালনের ক্ষেত্রে। সকালে একবার এবং বিকালে হাঁসকে ঘরে আলোর সময় আর একবার মাোট দু’বার অল্প করে আবার দিলেই চলবে। সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় হাঁস পালনের ক্ষেত্রে দৈনিক মোট প্রয়োজনীয় খাদ্যকে তিন ভাগে ভাগ করে তিন বারে খেতে দিতে হবে। পানির পাত্রে সবসময় পরিষ্কার পানি। রাখতে হবে।

হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদনঃ

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস সাধারণত ডিমে তা দিতে চায় না। তাই কুরচি মুরগির সাহায্যে ক্যাম্পবেল হাঁসের ডিম ফোটানাো হয়। একটি কুরচি মুরগি একবারে ৮-১০টি হাঁসের ডিমে তা দিতে পারে। তবে বেশি পরিমাণে ব্যবসার জন্য বাচ্চা উৎপাদন করতে হলে কৃত্রিম উপায়ে ডিম ফোটানাো যন্ত্র বা ইনকিউবেটরের সাহায্যে মুরগির ডিমের মতোই হাঁসের ডিমও ফোটানাো যায়। হাঁসের ডিম ফুটে বাচ্চা হতে ২৮ দিন সময় লাগে।

হাঁসের বাচ্চার যত্ন ও পরিচর্যাঃ

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের বাচ্চার ১ দিন থেকে ২১ দিন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি যত্নের প্রয়োজন। এ সময়কালে উপযুক্ত যত্ন ও পরিচর্যার অভাব হলে বাচ্চার মৃত্যুর হার অনেক বেশি হয়। প্রথম তিন সপ্তাহকাল হাঁসের বাচ্চাকে তারের জালের মেঝেতে অথবা মাটি বা সিমেন্টের মেঝেতে কাঠের গুড়ো বিছিয়ে তার উপর রাখা ভালো। কাঠের গুড়োর উপর বাচ্চা রাখলে মেঝেকে সব সময় শুকনো রাখতে হবে; সেজন্য গুড়া গুলোকে প্রতিদিনই একবার করে উল্টে দিতে হবে। তিন বা চার সপ্তাহ পর বাচ্চার অবস্থা অনুযায়ী তাদের সাধারণ মেঝেতে বা পুকুরে ছাড়া যেতে পারে।
২১ দিন থেকে ১ মাস পর্যন্ত হাঁসের বাচ্চাদের তাপ দিয়ে রাখতে হয়, যাকে ব্ৰডিং বলা হয়। ইলেকট্রিক বা দিয়ে এই তাপ দিতে হয়। প্রথম সপ্তাহে ঘরের তাপমাত্রা ৩০° সেন্টিগ্রেড হওয়া দরকার। এরপর প্রতি সপ্তাহে ৩° সে. করে কমিয়ে ২৪° সে. পর্যন্ত নামিয়ে আনতে হয়। গরমকালে এমনিতেই তাপমাত্রা বেশি থাকে বলে বাচ্চাদের অসুবিধা হয় না। তবে শীতকালে প্রয়োজনীয় তাপ না দিলে বাচ্চার মৃত্যুও হতে পারে।
সদ্যজাত বাচ্চাকে প্রথম ২৪ ঘণ্টা কিছু খেতে দেবার প্রয়োজন হয় না। এরপর ২৩ দিন খাদ্যকে পানির সাথে মিশিয়ে নরম ও পাতলা করে খাওয়াতে হয়। এরপর সাধারণ খাবার অল্প পানিতে মিশিয়ে খেতে দিতে হয়। বাচ্চাকে যখন খাবার দেওয়া। হবে কেবল তখনই পানির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। অনেক আগে বা পূর্ব রাতে ভিজিয়ে রাখলে ছত্রাক জন্মাতে পারে যা হাসকে রোগাক্রান্ত করে ফেলতে পারে।
হাঁসের বাচ্চা পালন বিষয়ে আরো যেসব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ইঁদুরের উৎপাত থেকে বাচ্চাকে রক্ষা করা, কম জায়গায় এক সঙ্গে গাদাগাদি করে না রেখে প্রতিটি বাচ্চার জন্য বয়স অনুসারে উপযুক্ত জায়গায়। সংকুলান করা এবং জলের পাত্রের গভীরতা ৫-৭.৫ সেন্টিমিটার রাখা, কেননা এর বেশি হলে বাচ্চা পানিতে ডুবে যেতে পারে।

বাড়ন্ত হাঁসের যত্নঃ

বাচ্চার বয়স ১ মাস হয়ে যাবার পর বাড়ন্ত অবস্থায় ঘরে আর তাপ দেবার প্রয়োজন। হয় না। পানির পাত্রে পানির গভীরতা বাড়িয়ে ১২.৫-১৫.০ সেন্টিমিটার করতে হয়। যাতে হাঁস তাদের মাথা ডোবাতে পারে। তাছাড়া খাবার ও পানির পাত্র দিতে হবে এবং থাকার জায়গার যাতে অভাব না ঘটে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এ সময় কোনো কৃত্রিম আলোর প্রয়োজন হয় না, দিনের আলোই যথেষ্ট।

ডিমপাড়া হাঁসের যত্নঃ

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস উপযুক্ত যত্ন ও পরিচর্যা পেলে সাড়ে ৪ মাস বয়স থেকেই ডিম। দিতে শুরু করে। হাসপ্রতি নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা ছাড়াও চরবার জন্য কিছুটা জায়গা থাকলে ভাল। ঘর সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। লক্ষ রাখতে হবে যেন প্রয়োজনীয় খাবার পানি ও পানির ঘাটতি না হয়।
হাঁসের ঘরে দিনের আলো ছাড়াও আরো ২-৪ ঘণ্টা কৃত্রিম আলোর প্রয়োজন । কেননা ডিম পাড়ার সঙ্গে আলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। ঘরে ৩০ সেমি, X ৩০ সেমি. X ৪৫ সেমি. আকারের ডিম পাড়ার বাক্স রাখতে হয় যাতে হাঁস ওসব বাক্সে ডিম পাড়ে। প্রতি ৩টি হাঁসের জন্য একটি বাক্স রাখতে হয়। ডিম পাড়া বাক্সে নরম ও শুকনো ঘাস পাতা বা নরম বিছালি রাখতে হবে এবং তা সপ্তাহে ২/৩ বার। পাল্টে দিতে হবে। ধরার প্রয়োজন হলে হসকে দেহের পাশের দিকে না ধরে ঘাড়ের কাছে ধরাই ভালো।

সর্বশেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪, ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

আরো পড়ুনঃ

খামার করার ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক সুফল

সব সময় তো আমরা রোগ, ব্যাধি, ব্যবস্থাপনা আর সমস্যা নিয়ে আলোচনা করি। আজ চেষ্টা করছি একটু ভিন্ন আলোচনা করতে। ধর্মীয় মূল্যবোধ :- আমি একজন মুসলিম। আর আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ...

সুগন্ধি কারিপাতার ব্যবহার ও পরিচিতি

চিত্রঃ ফুলসহ কারিপাতা গাছ পরিচিতিঃ কারিপাতা Rutaceae গোত্রের একটি উপকূলীয় উদ্ভিদ, যা ভারত এবং শ্রীলঙ্কা এর আঞ্চলিক উদ্ভিদ। যার উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Murraya koenigii। মূলত কারি বা ঝোল তরকারি রান্নার জন্য...

জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম

স্বাদ ও জনপ্রিয়তার দিক থেকেব আম বাংলাদেশের ফলের রাজা। আর ফলের রাজা আমের রাজধানী হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার খিরসাপাত আম ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই  পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে।...

মন্তব্য সমূহঃ

  1. Mamunur Rashid Babu says:

    ধন্যবাদ এতো সুন্দর করে উপস্থাপনার জন্য ☺

  2. আর টিকেল টি ভালো হয়েছে আরো ভালে হতো য়দি
    হাঁসের খাবার চাট দুই একটি আরো থকতো

    1. Admin says:

      ধন্যবাদ। ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে আরো তথ্য যুক্ত করার চেষ্টা করবো

  3. মোঃ শরীফ says:

    অনেক অনেক ধন্যবাদ এডমিন ভাইকে।

Your email address will not be published.